।।একগুচ্ছ পুনরাধুনিক কবিতা। উৎসর্গ : অর্ঘ্য দত্ত।।
বাস
।
বাসের জানালা। যত কাচ। তত রোদ
কালো শাড়ি। কাঁচা শাড়ি। গোলাপি আভাস
।
যে মেয়েটা। ঢুকে গ্যাছে হাতের পুতুলে
বাপের বান্ধবী তাকে রূপকথা বলে
।
স্টপেজ পেরিয়ে গেলে। ধুলো ঘুরে যায়
বড় পুরুষের হাতে। খাটো মহিলারা
।
চাকা। ঘোরে। ওঠে। নামে। ইঞ্জিন। লাগেজ
থেমে গেলে বাস নয়। বাসা মনে হয়
।
দুধস্বপ্ন
।
স্বপ্নের ভেতরে শুয়ে। রূপ দেখি আমি
স্বপ্নের সময় নাকি দ্রুত কাটে খুব
।
যেদিকে ফেটেছে ফুল। আমি তার ফেনা
বুলবুল। বুলবুল। স্তনের স্বদেশ
।
রিস্টওয়াচের চেয়ে ব্রেসলেট ভালো
যত সাদা। যত নার্স। আমি আর তাকাব না
।
ওই মণিবন্ধ ছুঁয়ে ১ যে লহমা
স্থির হয়ে আছে। তার প্রসূতিসদন
।
এ সময় দুধ ছাড়া আর কিছু নয়
তোমার কাঁটায় আমি। গোয়ালা আসুক
।
মনোরমার পেট
।
মনোরমা। কেঁদে ওঠে শাঁখ বাজিয়েই
আমি তার সাদা বুকে পেটে টম্যাটো কেটেছি
।
স্তন আমি জানি না তো। যোনি কাকে বলে
বাগানে খাটিয়া নেই। আজ তো উৎসব
।
মনের যৌনাঙ্গ ধুয়ে। হাড়-টাড় বেছে
পুজোর কুসুম। যথা। ছিঁড়ে নিতে হয়
।
গোলাপ হাজির
।
পৌষের সকাল। কাঁচা। রোদ্দুরে দাঁড়িয়ে
যে নারীটি মুড়ি খায় ডুবিয়ে আঙুল
।
আমি তার তেল হই। স্নেহ হই তার
শরীরের জন্য নয়। যেমতি পীরিত
।
যে কোনো সেতুতে থাকে আদালত। ফাঁক
নদী তাকে ছুঁয়ে যায়। লরি তো ফেরে না
।
কোথাও কি মানে থাকে। চপ্পলের শেষে
কোথাও কি মানে হয়। খড়ে। বাঁশে। হিমে
।
ছাই হয়ে পড়ে আছে। জিপসির টায়ার
নকল দুঃখের খাঁটি গ্লাস কাচ পড়ে আছে
।
বার্লির। যে ক্ষেত হয়। বাজারে। প্যাকেটে
মাটির উপরে কিছু মাটি। জমে যায়
।
কাঁচা রোদ। হেসে ওঠে অশোককুমার
বিবাগী রুক্ষের প্রিয় দাড়ি পাওয়া গ্যালো
।
বালির স্বভাব। যাকে মরুভূমি বলে
উড়ে আসে সুখী পাখি। গোলাপের
শীতে
।
জাহিল পথিক
।
পথের শেষে তো। কোনো হোটেল থাকে না
থাকে ১ ম্যানেজার। চোখে জল নেই
।
রক্তের গভীরে পথ। গাছ ধুলোময়
তার চেয়ে বেশি ধুলো। খচ্চরের গায়ে
।
রোদের বাঁশরী বাজে। একঘেয়ে সুর
বিশ্রামের অছিলায় বিকেল এসেছে
।
ম্যানেজার উবু হোল। ফেজ টুপি খুলে
তাঁবু নেই। আজ হবে মাংসের নিশীথ
।
শাড়ির নালিশ। খর। বঁটি
রাখা আছে
মোরগের আর্তনাদ অবসান। জাহিল পথিক
।
(চিত্রঋণ : 'what lies beneath / Rameshwar Broota)
(চিত্রঋণ : 'what lies beneath / Rameshwar Broota)
বাস এবং লহমা এই দুটো কবিতা ভালো লাগলো
ReplyDeleteধন্যবাদ
Deleteসবক'টা কবিতাই ভালো লাগল। এ যেন শব্দবন্ধ আর ছন্দের খেলা। কেমন যেন আচ্ছন্ন করে এই শব্দ ও তার সুর। এই ভালো লাগা ব্যাখ্যা করা যায় না, শুধু অনুভব করতে হয় নিশ্চুপে।
ReplyDeleteধন্যবাদ। প্রাণিত করলেন।
Deleteশব্দ ও ভাব। শব্দের অভাব নয়; অভাবীর শব্দ। বড় ভাল । জয় হোক।
ReplyDeleteধন্যবাদ রেনেসাঁ
Deleteঅসম্ভব শব্দ নিয়ে খেলা ভাবের আড়ালে।
ReplyDeleteধন্যবাদ অরবিন্দ
Deletesobguloi ekokthay fatafati.. apurbo
ReplyDeleteধন্যবাদ সোমাভ
Deleteপ্রতিটি খারাপ কবিতারই ততোধিক খারাপ কিছু পংক্তি আমার যথারীতি কম খারাপ লাগল। এমন উপহার আপনার মতো একজন কম ভালো লাগা বেশি খারাপ লাগা নামকেওয়াস্থে বন্ধুর কাছ থেকে সত্যিই আশা করিনি। এবার আনফ্রেন্ড করেই ফেলব ভাবছি। ২০১৮ তে অন্তত ঠিক টের পাবেন। :) :) :)
ReplyDeleteহা হা হা হা... আপনার নামটাই আপনাকে দিলাম
Deleteকিছু বলার নেই শুধু ভাসতে ইচ্ছে করছে এই কবিতার সমুদ্রে।
ReplyDeletemonoromar pet lekhatay, oi "ami tar sada pet e tomato ketechi" uff... fida hoy gelam...
ReplyDeleteধন্যবাদ শুভ
Deleteদুধস্বপ্ন, মনোরমার পেট আর জাহিল পথিক ভাল লাগলো ।
ReplyDeleteওই মণিবন্ধ ছুঁয়ে ১ যে লহমা
স্থির হয়ে আছে। তার প্রসূতিসদন
এ সময় দুধ ছাড়া আর কিছু নয়
তোমার কাঁটায় আমি। গোয়ালা আসুক----- চমৎকার
ভালোবাসা রঞ্জন-দা
Deleteআমার আশা অনুযায়ী কবিতা পেলাম। তবু কেন যে কবি অনুপম নিজেকে অযথা অনেকের কাছে অপ্রিয় করে তোলে। লেখাটুকুই থাকবে ,আমার মনে হয়...
ReplyDeleteধন্যবাদ :) আসলে দন কিহোতে আর হাওয়াকলের লড়াই
Deleteহয়তো আমারই ব্যর্থতা
ReplyDeleteজাহিল পথিক থেকে কোনও রস
আস্বাদন করতে পারলাম না ।
বাদবাকি প্রতিটা লেখাই সুস্বাদু
খুব ভালো লাগলো, সেই
প্রাণের কাছাকাছি থাকা
অনুপমদার লেখার মতোই
ধন্যবাদ সুকৃতি
Deleteশব্দের সাথে শব্দ নিষিক্ত হবার পর
ReplyDeleteছায়াপথে হেঁটে গেছে ছিন্ম ভাবনারা
আসলে উৎসর্গকৃত অনুসরণ আর
প্রেমিকার উন্নত স্তন-যুগলের মধ্যে
প্রভেদ থাকতে নেই...
...
DeleteAnupam...eto jento Kabita onek din por podlam...eto stabdho...udasin...byathay sundar ek nirjan kabi,ke....tomar ei onek moner moddhye Mon ,take bhalobasi je....Ami majhe majhe bhabi...eto kolaholer moddhye, Anupam ki tar ei moner mukhomukhi hoy sacheton bhabe? ...aj dekhlam, tumi,ee tomay chapiye giyecho... Je eka...je kebol prakaser bedonay apon mone akhor Kate...je bhabe tulot kagoje kono achena udasin kabi ,kaler akhore lekhe, bhurjopatre...bhasiye dey tarpor ekante...sei mohomukto ek ekante ekok kabir cholachol pelam...jadi jabotio sanket, chinho gulo bade de, alonkar khule de ga theke nesobde....tabuo era ekok bedonay bhetor bhijiye dite pare...etukui mone hoy Kabita...kabi...etukui tomar upohar...kato bhabe kato din tomar Kabita dure... Eka...ekante podchi....bhebechi...Anupam tomar sob parichito mukher bhetore ei mukhtake ekbar dekho...amake bhasao....tumi aj kothao hoyto Amar nirab parthona sunecho....ei kabitar ei sadamata chirontonota...
ReplyDeleteTomaree...aj etai Amar upohar....tomar kach theke
বিরাট পাওয়া এটা আমার।
Deleteএখন কবিতায় যা খুঁজি, যা যা খুঁজি। আবেশ।
ReplyDeleteধন্যবাদ
Deleteঅনুপম,চোখের কালশিটে থেকে কেন মনে হল অদৃশ্য টুপ।ভেতর নিংড়ে, খুঁড়ে খুঁড়ে কিছু আমি কিছু কাচ,শীত আর বরফ।আবছা খুলে খুলে দেখতে পেলাম একটি শিশুমুখ...আরও অনেক একপাতা,পাতার গুঁড়ো লিখে ফেলা যায় এই লেখাগুলো ছুঁয়ে,লেখা যায় না...
ReplyDeleteপাঠকের স্পর্শ পেলাম, যা কদাচিৎ মেলে
Deleteবাস, মনোরমার পেট, জাহিল পথিক বেশি ভালো লাগলো।
ReplyDeleteধন্যবাদ
Deleteকাউকে না---শুধু নিজেকেই অতিক্রম করে যাও, যাচ্ছ বারবার।
ReplyDelete...
Deleteপড়লাম। একনিশ্বাসেই পড়লাম। এই যে ছোট ছোট বাক্য। যতিচিন্হ,আর, in between lines অনেক যন্ত্রণা ও আনন্দ পুরে দেয়া...অনবদ্য!
ReplyDeleteখুব আনন্দ পেলাম।
Deleteভালো লেগেছে সব লেখা গুলোই। প্রথম, দ্বিতীয় এবং শেষের টা বেশি ভালো লাগল। এবং লেখা গুলো বেশ নরম, অনুপম মুখোপাধ্যায় নামের থেকে...
ReplyDelete।।আমি যে নরম হই, টিপে দেখলে না।। ... আমারই কবিতার লাইন।।
Deleteগতকালই পড়েছিলাম। ভাবলাম আরও ভালো করে পড়ে নিই তারপর মন্তব্য করবো। এযেন এক মহা আনন্দের কবিতা। যতিচিহ্নের চমৎকার ব্যবহার আমাকে মুগ্ধ করেছে। সবচেয়ে ভালো লেগেছে ‘বাস’, দুধস্বপ্ন ও জাহিল পথিক।
ReplyDeleteধন্যবাদ মোকসেদুল
Deleteশব্দগুলো চোখে ভাসে, মাথায় ঢোকে, তারপর হৃদয়মথিত হয়। মূর্ত বিমূর্ত হয় কবিতাগুলো। পাঠের পরে মগজ থেকে সহজে সরতে চায় না অনুপমের কবিতা। কবিকে অভিনন্দন।
ReplyDeleteধন্যবাদ। আপ্লুত হলাম।
Deleteবাস, যেন সারাজীবন সাহিত্যের বিছানায় বাসা হয়ে থাকে... আমি কিন্তু বাসুদেব নই, আমি অভিষেক।
ReplyDeleteতুমি তো গেছো। দাদা
Deleteআপনার কবিতা এই প্রথম পড়লাম।সব কবিতাগুলোই আমার খুব ভালো লেগেছে।অক্ষরবৃত্তকে মনের মত করে সাজিয়েছেন।
ReplyDeleteধন্যবাদ। আশা করি ভবিষ্যতেও আপনাকে পাবো।
Deleteভালো লাগলো সব কবিতাই ...একটার পর একেকটা ...
ReplyDeleteধন্যবাদ
Deleteসব শব্দে সঠিক আলো এসে লাগল।সবগুলি ভালো লেগেছে।
ReplyDeleteধন্যবাদ
Deleteকবিতাগুলো ভাল লাগলো অনুপম। আপনার আরো কবিতা পড়ার আগ্রহ তৈরি হলো। আপনার একটি উপন্যাস পড়ে যেমন আপনার আর সব কথাসাহিত্য পড়ার ইচ্ছে হয়েছিল। অভিবাদন!!!
ReplyDeleteধন্যবাদ সুহৃদ
Deleteঅক্ষরবৃত্তের সেই পুরাতন ৮+৬ পয়ার, নানা দেশি বিদেশী যুক্তাক্ষর ব্যবহারের মুন্সিয়ানা দেখা গেলো! একটা সাঙ্ঘাতিক পর্যায়ের এসট্যাবলিশড ছন্দে নতুন আধেয় পরিবেশনের (মুক্তকে না গিয়ে) কাজটাকে এ্যপ্রিশিয়েট করছি খুবই! ... 'দাড়ির' মাধ্যমে দেয়া এই সিন্ট্যাকটিক সাজেশ্চনগুলি দিয়ে পাঠক আমি কী করবো বুঝতে পারলাম না। তবে লেখাগুলি পুঁথির মত পড়ে, তার উপর 'দাড়ি'গুলি ইম্পোজ করে করে আবার পড়ে দেখলাম-- অর্থাৎ, দাড়িগুলির সাথে ছন্দের চলনের গুতাগুতি ঘটিয়ে! ((( প্রায় সর্বত্রই ৮-৬ এর পর্ববিন্যাস অটুট। মানে, এটাই যে এই কবিতাগুলির পর্ববিন্যাস, তা পাঠক হিসাবে আমার কাছে স্পষ্ট। তবে কিছু কিছু জায়গায়, ছন্দকে একটু বেশিই 'স্ট্রেচ' করা হচ্ছে বলে মনে হলো। সহজাতভাবে যেই চাল চলে আসে 'ওই মনিবন্ধ...' তে (যুক্তাক্ষর থাকার পরেও), 'রিস্টওয়াচের'-কে সেই ৬ মাত্রার চাল দিতে গিয়ে পড়তে হচ্ছে 'রিস্টোয়াচের'। তা না করে, যদি পড়ি 'রিস্ট্-ওয়া-চের', তাতে ধ্বনির যে ধার তৈরি হয়ে যায়, তা অব্যবহিত পংক্তিগুলির টিপিকাল অক্ষরবৃত্তিক কোমলতার সাথে আবার কেমন যেন বেমানান ঠ্যাকে! একই কথা, 'শরীরের জন্য নয়'-এই পর্বেও টের পেলাম... মনে হলো, সঙ্কোচনের উপর এই উপর্যুপরি নির্ভরতা ব্যতিরেকে, বরং যদি বলা হতো 'দেহের জন্য নয়' (বা, 'শরীরের তরে নয়') তাহলে যেন কিছুটা বিরাম তৈরি হতো... ৮-৬ এর সহজাত দুলুনিও দুলে নিতে পারতো হেসে খেলে।... ...ইত্যাদি অবজারভেশন... ... যাই হউক। কে জানে... হয়তো এসব 'হোঁচট' ইচ্ছা করেই তৈরি করা হয়েছে... পরীক্ষানিরীক্ষা জারি থাকুক...))) শুভেচ্ছা
ReplyDeleteধন্যবাদ বন্ধু
Deleteশখ বেজে ওঠে। ভেতরে। ভেতরে বাড়ি।
ReplyDeleteঝুপড়ী জগৎ বলবৎ। স্বপ্নে। স্বপ্নে শহরে।
এটা কবিতা পড়ে আমার মনের অবস্থা। চুমো তোমার কলমে...
গভীরতা কতটা ধরতে পেরেছি নিজের প্রতি সে সন্দেহ থাকলেও, শব্দ ও সুরের খেলায় পাঠটা বেশ সুখকর লাগল।
ReplyDelete